দেওয়াল ঘড়ির দিকে চোখ যেতেই ধরমরিয়ে উঠে পড়লেন ব্রজেন বাবু। সকাল ৭ টা বেজে গেছে। ইস অনেক দেরি হয়ে গেল আজ। রাজ্য সরকারি কর্মচারী দের এখন নাওয়া খাওয়ার সময় নেই। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। এই সময় টা মনোনয়ন পত্র দাখিলের সময়।
কোনমতে বাজার দোকান করে, স্নানে ঢুকলেন। স্নান সেরে ঠাকুর ঘরে ঝড়ের গতিতে প্রনাম সারলেন। বৈশাখ মাস হলেও এখনো তেমন গরম পড়েনি। স্ত্রী মিত্রা কে বললেন খাবার দিতে। যতটা সম্ভব অল্প করে। দশটার মধ্যে বিডিও অফিসে পৌছাতেই হবে। এখন হাজিরার খুব কড়াকড়ি।
বাড়ি থেকে অফিস যেতে বাসে পাক্কা এক ঘন্টা সময় লাগে। স্টান্ড থেকেই ওঠেন বলে অফিস টাইমেও বসার জায়গা পেতে অসুবিধা হয় না। আজও বসার জায়গা পেলেন যথারীতি।
কিছুটা পথ যেতেই, বাস টা হঠাত ঝাঁকুনি দিতে লাগল। বেশ একটু ঘুম ঘুম আসছিল। দিল ঘুমটা চটকে। ডেলি প্যাসেঞ্জাররা ইতিমধ্যে হইচই শুরু করে দিয়েছে। মিনিট তিনেক পর বাস টা একদম দাঁড়িয়ে গেল। ড্রাইভার বলল বাস আর যাবে না।
অসন্তোষ বাড়তে লাগল যাত্রীদের ভিতর।
ব্রজেন বাবু অধৈর্য হয়ে উঠলেন। কন্ডাকটর কে গালিগালাজ দিতে দিতে বললেন স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি বেরোনোর সময় দেখে নিতে পারিস না? তাহলে এই রকম ভোগান্তি হয় না। কন্ডাক্টর ছেলেটা চ্যাঙড়া। এতক্ষন সব হজম করছিল। টিকিট এর পয়সা ফেরত দিচ্ছিল। আর থাকতে না পেরে বলল, আরে দাদা আপনিও তো বেড়িয়েছেন বাড়িথেকে। কোনো সিওরিটি আছে আপনি গন্তব্যে পৌছাবেন কি না?
আর কথা না বাড়িয়ে, বাস থেকে নেমে অন্য একটা ভিড় বাসে উঠলেন ব্রজেন বাবু। আজ টাইমের মধ্যে পৌছোতেই হবে। ঘাম হচ্ছে খুব। শরীর টা কেমন যেন অস্থির লাগছে। বমিভাব আসছে ভিড়ের মধ্যে। বুকের ভিতর একটা ভীষণ চাপ অনুভব করছেন। চ্যাঙড়া কন্ডাক্টর ছেলে টার কথা মনে এল, আপনি যে গন্তব্যে পৌছবেন তার কোনো সিওরিটি আছে?
কারা যেন চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিল। কানে ভেসে এল কারা যেন বলাবলি করছে, অসুস্থ শরীর নিয়ে কেন যে এই লোকগুলো বাড়ি থেকে বেরোয়?
ব্রজেন বাবুর মোবাইল ফোন থেকেই একটা অচেনা কণ্ঠস্বর মিত্রা কে দুঃসংবাদটা দিল। তখন বাজে সকাল সাড়ে দশটা।
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
২৪ এপ্রিল ২০১৮
কোনমতে বাজার দোকান করে, স্নানে ঢুকলেন। স্নান সেরে ঠাকুর ঘরে ঝড়ের গতিতে প্রনাম সারলেন। বৈশাখ মাস হলেও এখনো তেমন গরম পড়েনি। স্ত্রী মিত্রা কে বললেন খাবার দিতে। যতটা সম্ভব অল্প করে। দশটার মধ্যে বিডিও অফিসে পৌছাতেই হবে। এখন হাজিরার খুব কড়াকড়ি।
বাড়ি থেকে অফিস যেতে বাসে পাক্কা এক ঘন্টা সময় লাগে। স্টান্ড থেকেই ওঠেন বলে অফিস টাইমেও বসার জায়গা পেতে অসুবিধা হয় না। আজও বসার জায়গা পেলেন যথারীতি।
কিছুটা পথ যেতেই, বাস টা হঠাত ঝাঁকুনি দিতে লাগল। বেশ একটু ঘুম ঘুম আসছিল। দিল ঘুমটা চটকে। ডেলি প্যাসেঞ্জাররা ইতিমধ্যে হইচই শুরু করে দিয়েছে। মিনিট তিনেক পর বাস টা একদম দাঁড়িয়ে গেল। ড্রাইভার বলল বাস আর যাবে না।
অসন্তোষ বাড়তে লাগল যাত্রীদের ভিতর।
ব্রজেন বাবু অধৈর্য হয়ে উঠলেন। কন্ডাকটর কে গালিগালাজ দিতে দিতে বললেন স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি বেরোনোর সময় দেখে নিতে পারিস না? তাহলে এই রকম ভোগান্তি হয় না। কন্ডাক্টর ছেলেটা চ্যাঙড়া। এতক্ষন সব হজম করছিল। টিকিট এর পয়সা ফেরত দিচ্ছিল। আর থাকতে না পেরে বলল, আরে দাদা আপনিও তো বেড়িয়েছেন বাড়িথেকে। কোনো সিওরিটি আছে আপনি গন্তব্যে পৌছাবেন কি না?
আর কথা না বাড়িয়ে, বাস থেকে নেমে অন্য একটা ভিড় বাসে উঠলেন ব্রজেন বাবু। আজ টাইমের মধ্যে পৌছোতেই হবে। ঘাম হচ্ছে খুব। শরীর টা কেমন যেন অস্থির লাগছে। বমিভাব আসছে ভিড়ের মধ্যে। বুকের ভিতর একটা ভীষণ চাপ অনুভব করছেন। চ্যাঙড়া কন্ডাক্টর ছেলে টার কথা মনে এল, আপনি যে গন্তব্যে পৌছবেন তার কোনো সিওরিটি আছে?
কারা যেন চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিল। কানে ভেসে এল কারা যেন বলাবলি করছে, অসুস্থ শরীর নিয়ে কেন যে এই লোকগুলো বাড়ি থেকে বেরোয়?
ব্রজেন বাবুর মোবাইল ফোন থেকেই একটা অচেনা কণ্ঠস্বর মিত্রা কে দুঃসংবাদটা দিল। তখন বাজে সকাল সাড়ে দশটা।
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
২৪ এপ্রিল ২০১৮
No comments:
Post a Comment