আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাষ ছিলই। দুপুর হতে না হতে আকাশ কালো করে এল।
সুমিত আজ আর দেরি না করে অফিস থেকে বেড়িয়ে পড়ল বিকেল বিকেল। অন্যদিন বেশ কিছুটা সময় অফিসে থাকতে হয় কাজের চাপে। কিন্তু আজ যা ওয়েদার, তাতে বাড়ি ফিরতে বেশ চাপ আছে মনে হয়।
বাইরে বেড়িয়েই মনে পড়ল আজ তো ইন্ডিয়ার খেলা আছে টি টোয়েন্টি। যাক বাড়ি ফিরে জমিয়ে খেলা দেখা যাবে। বাড়িতে জয়িতা কে ফোন করে বলল আজ খিচুড়ি করতে আর সাথে ডিম ভাজা।
এদিকে যত সময় যাচ্ছে ওয়েদার অত্যন্ত খারাপ হচ্ছে। সুমিত একটা ওলা পেয়ে গেল সহজেই। কিছুটা নিশ্চিন্ত। তুমুল ঝড় শুরু হল। সাথে বাজ পড়া আর মুশলধারায় বৃষ্টি। প্রচন্ড দূর্যোগ।
সন্ধ্যা বেলার মধ্যেই বাড়ি ফিরে এল। কিন্তু চারদিকে জল থইথই করছে। লোডশেডিং হয়ে গেছে প্রায় এক ঘন্টা হতে চলল। এই অবস্থায় কখন যে আলো আসবে কোন ঠিক নেই। মোবাইল ফোন এর চার্জ ও প্রায় শেষ।
বাড়িতে মা এই সময়টা রোজ বাংলা সিরিয়াল দেখে। লোডশেডিং এর ফলে আজ টিভি বন্ধ। জয়িতা ঘরকন্নার কাজ সামলায়। আর সামলায় বুবলাই কে। ওদের সাত বছরের সন্তান। সবাই ব্যস্ত। শুধু রাতে খাবার টেবিলেই যেটুকু কথা হয়। সবাই যে যার মত নিজের নিজের কক্ষে বাস করে আর পাঁচটা সুখী পরিবার এর মতন।
ঘরে হারিকেন এর পাট চুকেছে বহু বছর হল। এখন বাতিই ভরসা। আগে সন্ধ্যা নামলেই আলো চলে যেত। সেই সব দিন গুলো তে হারিকেন এর যত্ন একটা রোজকার কাজ ছিল সব বাড়িতেই। সলতে গুলো কাচি দিয়ে সমান ভাবে কাটা, কাচ পরিস্কার করা ইত্যাদি। সেসব পাট উঠে গেছে বহুদিন হল।
পাড়ার দোকান থেকে গোটা চারেক বাতি এনে রাখল সুমিত।কে জানে কখন আলো আসবে? মনে পড়ল, ছোট বেলায় আলো চলে গেলে বলা হত জ্যোতি বাবু চলে গেলেন। আর আলো এলেই জ্যোতি বাবু আসতেন।
ধুত্তোর কিছুই ভাল লাগছে না। খেলা দেখা মাটি। মোবাইল ও সুইচ অফ। বাইরে বৃষ্টি ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
মায়ের ঘরে মা গুন গুন করে বানী জয়রাম এর একটা গান গাইছিল। মায়ের পাশে বসে সুমিতও গলা মেলাল কত্ত বছর পর। বুবলাই ও জয়িতাও চলে এল ঘরে। আজ পড়ার ছুটি। বুবলাইয়ের ছড়া, জয়িতার আবৃত্তি। মায়ের মুখে ভুতের গল্প। কতকিছু আনন্দ ফিরে এল আজ। কোথা দিয়ে যে সময় টা কেটে গেল নিমেষে। কত দিন পড় আজ সবাই একসাথে, একমনে গান, গল্প, প্রান খুলে আড্ডা। আর সব শেষে খিচুড়ি। সেই পুরোনো স্বাদ।
বাইরে দুর্যোগ টা কমেছে।
রাত এগারো টা নাগাদ আলো এল। সবাইকে চমকে দিয়ে হাততালি দিয়ে বুবলাই বলে উঠল জ্যোতি বাবু এসে গেছে, জ্যোতি বাবু এসে গেছে।
আচ্ছা, মাঝে মাঝে লোডশেডিং হয় না কেন??
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
সুমিত আজ আর দেরি না করে অফিস থেকে বেড়িয়ে পড়ল বিকেল বিকেল। অন্যদিন বেশ কিছুটা সময় অফিসে থাকতে হয় কাজের চাপে। কিন্তু আজ যা ওয়েদার, তাতে বাড়ি ফিরতে বেশ চাপ আছে মনে হয়।
বাইরে বেড়িয়েই মনে পড়ল আজ তো ইন্ডিয়ার খেলা আছে টি টোয়েন্টি। যাক বাড়ি ফিরে জমিয়ে খেলা দেখা যাবে। বাড়িতে জয়িতা কে ফোন করে বলল আজ খিচুড়ি করতে আর সাথে ডিম ভাজা।
এদিকে যত সময় যাচ্ছে ওয়েদার অত্যন্ত খারাপ হচ্ছে। সুমিত একটা ওলা পেয়ে গেল সহজেই। কিছুটা নিশ্চিন্ত। তুমুল ঝড় শুরু হল। সাথে বাজ পড়া আর মুশলধারায় বৃষ্টি। প্রচন্ড দূর্যোগ।
সন্ধ্যা বেলার মধ্যেই বাড়ি ফিরে এল। কিন্তু চারদিকে জল থইথই করছে। লোডশেডিং হয়ে গেছে প্রায় এক ঘন্টা হতে চলল। এই অবস্থায় কখন যে আলো আসবে কোন ঠিক নেই। মোবাইল ফোন এর চার্জ ও প্রায় শেষ।
বাড়িতে মা এই সময়টা রোজ বাংলা সিরিয়াল দেখে। লোডশেডিং এর ফলে আজ টিভি বন্ধ। জয়িতা ঘরকন্নার কাজ সামলায়। আর সামলায় বুবলাই কে। ওদের সাত বছরের সন্তান। সবাই ব্যস্ত। শুধু রাতে খাবার টেবিলেই যেটুকু কথা হয়। সবাই যে যার মত নিজের নিজের কক্ষে বাস করে আর পাঁচটা সুখী পরিবার এর মতন।
ঘরে হারিকেন এর পাট চুকেছে বহু বছর হল। এখন বাতিই ভরসা। আগে সন্ধ্যা নামলেই আলো চলে যেত। সেই সব দিন গুলো তে হারিকেন এর যত্ন একটা রোজকার কাজ ছিল সব বাড়িতেই। সলতে গুলো কাচি দিয়ে সমান ভাবে কাটা, কাচ পরিস্কার করা ইত্যাদি। সেসব পাট উঠে গেছে বহুদিন হল।
পাড়ার দোকান থেকে গোটা চারেক বাতি এনে রাখল সুমিত।কে জানে কখন আলো আসবে? মনে পড়ল, ছোট বেলায় আলো চলে গেলে বলা হত জ্যোতি বাবু চলে গেলেন। আর আলো এলেই জ্যোতি বাবু আসতেন।
ধুত্তোর কিছুই ভাল লাগছে না। খেলা দেখা মাটি। মোবাইল ও সুইচ অফ। বাইরে বৃষ্টি ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
মায়ের ঘরে মা গুন গুন করে বানী জয়রাম এর একটা গান গাইছিল। মায়ের পাশে বসে সুমিতও গলা মেলাল কত্ত বছর পর। বুবলাই ও জয়িতাও চলে এল ঘরে। আজ পড়ার ছুটি। বুবলাইয়ের ছড়া, জয়িতার আবৃত্তি। মায়ের মুখে ভুতের গল্প। কতকিছু আনন্দ ফিরে এল আজ। কোথা দিয়ে যে সময় টা কেটে গেল নিমেষে। কত দিন পড় আজ সবাই একসাথে, একমনে গান, গল্প, প্রান খুলে আড্ডা। আর সব শেষে খিচুড়ি। সেই পুরোনো স্বাদ।
বাইরে দুর্যোগ টা কমেছে।
রাত এগারো টা নাগাদ আলো এল। সবাইকে চমকে দিয়ে হাততালি দিয়ে বুবলাই বলে উঠল জ্যোতি বাবু এসে গেছে, জ্যোতি বাবু এসে গেছে।
আচ্ছা, মাঝে মাঝে লোডশেডিং হয় না কেন??
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
২২ এপ্রিল ২০১৮, রোববার
No comments:
Post a Comment