২০১০ সালের আজকের দিনেই BIFR এ চলে গেছিল এই সংস্থাটি। শেষের শুরু আজকের এই দিন টা থেকেই।
দেখতে দেখতে অনেক গুলো বছর পেরিয়ে গেলো। ছবি গুলো আজও চোখের সামনে ভেসে আসে। পুজোর আগে বিশ্বকর্মা পুজোর জাঁকজমক। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বোনাস পেয়ে শ্রমিক কর্মচারী দের আনন্দচ্ছল মুখ। সব কেমন যেন হারিয়ে গেলো।
আরিয়াদহ, কামারহাটি, দক্ষিণেশ্বর অঞ্চলে ইন্ডিয়া ফয়েলস লিমিটেড এর কথা বলছি। এলাকায় বয়স্ক জনেরা ভেনেস্তা নামেই এখনো অনেকে ডাকেন। যদিও এই নামকরন ১৯০৫ সালের। শেষমেশ নাম বদল হয়ে হল এস ডি এলুমিনিয়াম।
এলুমিনিয়াম ফয়েল প্রস্তুতকারক এই সংস্থা আমাদের অঞ্চলের একটা ল্যান্ডমার্ক ছিল। ব্রিটিশ আমলের এই কোম্পানি তে কাজ করার স্বপ্ন দেখতো শিক্ষিত মানুষজন। জীবিকার্জনের জন্য এলাকায় প্রসিদ্ধি ছিল এই সংস্থার।
পরবর্তী সময়ে খৈতান গোষ্ঠী যথেষ্ট সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করেছিলেন এই সংস্থাকে। এ সবই এখন ইতিহাস।
ভীষন ভীষন খারাপ লাগে যখন দেখি এই রকম নামী একটা কোম্পানি চোখের সামনে ধংস্ব হয়ে গেল। ভুল বললাম নস্ট করে দেওয়া হল। ম্যানেজমেন্ট ভুল, নাকি শ্রমিকদের দিশাহীনতা, নাকি অন্য কিছু তা জানি না। তবে ভিতরে ভিতরে রক্তাক্ত হই বন্ধুস্থানীয়দের দেখে। যারা এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।
শুনতে পাই বকেয়া টাকা, গ্রাচুইটির টাকা, পিএফ এর জমানো টাকা কিছুই এনারা পান নি। কবে পাবেন তাও বোধহয় কেউ জানেন না। গা শিঊরে ওঠে। মাইনে পেয়েও যেখানে এই দুর্মুল্যের বাজারে সংসার চালানো কস্টকর, সেখানে এনাদের চলে কি করে। অনেককেই দেখি বিকল্প কাজের সন্ধান করতে।
খুব খারাপ লেগেছিল দেখে যে এনারা কেনো কোনো আন্দোলনে গেলেন না। রথতলার মোড়ে কিছুদিন লিফলেট বিলি করে, কিছুদিন মাত্র অবস্থান করে, ধর্মতলায় লিফলেট বিলি করে কেন এনারা ক্ষান্ত হলেন? নিজেদের কথা আরো বৃহত্তর পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দিলেন না কেন? কেন মাত্র এক দু দিন বাজারী কাগজে ছাপা হল এনাদের দুর্দশার কথা। যেখানে শিল্প বন্ধের জন্যে দীর্ঘ দিন অবস্থান বিক্ষোভ হয়, সেখানে জলজ্যান্ত একটা কারখানা এভাবে কেন বন্ধ হয়ে গেলো? আরো তেজদ্বীপ্ত হওয়া যেত না কি?
জানি প্রশ্ন গুলো সহজ।
কিন্তু আমার কাছে উত্তর জানা নেই। কারোকাছে থাকলে জানাবেন।
যারা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তাদের কাছে আমার বিনম্র অনুরোধ, একটু মানবিকতা দেখান। কারখানার গেটে নরনারায়ন সেবার মতন খাবার ব্যবস্থা না করে, সম্মানের সাথে মাথা তুলে বাঁচতে সাহায্য করুন কর্মচারীদের। ভবিষ্যতে কারখানা খোলার সম্ভবনা যদি একান্ত নাও থাকে, এনাদের প্রাপ্য বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাটা অন্তত করুন।
সব্বাই ভাল থাকলে, তবেই আমরা সকলে ভাল থাকব।
পুজো আসছে, রাস্তায় রাস্তায় আলো লাগছে। কিন্তু এত আলোতেও, এলাকার কর্মহীন মানুষের মনের অন্ধকার দূর হবে কি?
পরিশেষে বলি ইন্ডিয়া ফয়েলস ছাড়াও অন্যান্য অনেক কারখানা আজ এই এলাকায় বন্ধ হয়ে আছে। আর্থ সামাজিক অবস্থা ভয়াবহ। অনুরোধ কোন রাজনীতি খুঁজবেন না এই লেখায়। যদি কিছু মাত্র ভুল বলে থাকি, তবে ভুল টা শুধরে দেবেন এই আশা রাখি।
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮।
দেখতে দেখতে অনেক গুলো বছর পেরিয়ে গেলো। ছবি গুলো আজও চোখের সামনে ভেসে আসে। পুজোর আগে বিশ্বকর্মা পুজোর জাঁকজমক। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বোনাস পেয়ে শ্রমিক কর্মচারী দের আনন্দচ্ছল মুখ। সব কেমন যেন হারিয়ে গেলো।
আরিয়াদহ, কামারহাটি, দক্ষিণেশ্বর অঞ্চলে ইন্ডিয়া ফয়েলস লিমিটেড এর কথা বলছি। এলাকায় বয়স্ক জনেরা ভেনেস্তা নামেই এখনো অনেকে ডাকেন। যদিও এই নামকরন ১৯০৫ সালের। শেষমেশ নাম বদল হয়ে হল এস ডি এলুমিনিয়াম।
এলুমিনিয়াম ফয়েল প্রস্তুতকারক এই সংস্থা আমাদের অঞ্চলের একটা ল্যান্ডমার্ক ছিল। ব্রিটিশ আমলের এই কোম্পানি তে কাজ করার স্বপ্ন দেখতো শিক্ষিত মানুষজন। জীবিকার্জনের জন্য এলাকায় প্রসিদ্ধি ছিল এই সংস্থার।
পরবর্তী সময়ে খৈতান গোষ্ঠী যথেষ্ট সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করেছিলেন এই সংস্থাকে। এ সবই এখন ইতিহাস।
ভীষন ভীষন খারাপ লাগে যখন দেখি এই রকম নামী একটা কোম্পানি চোখের সামনে ধংস্ব হয়ে গেল। ভুল বললাম নস্ট করে দেওয়া হল। ম্যানেজমেন্ট ভুল, নাকি শ্রমিকদের দিশাহীনতা, নাকি অন্য কিছু তা জানি না। তবে ভিতরে ভিতরে রক্তাক্ত হই বন্ধুস্থানীয়দের দেখে। যারা এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন।
শুনতে পাই বকেয়া টাকা, গ্রাচুইটির টাকা, পিএফ এর জমানো টাকা কিছুই এনারা পান নি। কবে পাবেন তাও বোধহয় কেউ জানেন না। গা শিঊরে ওঠে। মাইনে পেয়েও যেখানে এই দুর্মুল্যের বাজারে সংসার চালানো কস্টকর, সেখানে এনাদের চলে কি করে। অনেককেই দেখি বিকল্প কাজের সন্ধান করতে।
খুব খারাপ লেগেছিল দেখে যে এনারা কেনো কোনো আন্দোলনে গেলেন না। রথতলার মোড়ে কিছুদিন লিফলেট বিলি করে, কিছুদিন মাত্র অবস্থান করে, ধর্মতলায় লিফলেট বিলি করে কেন এনারা ক্ষান্ত হলেন? নিজেদের কথা আরো বৃহত্তর পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দিলেন না কেন? কেন মাত্র এক দু দিন বাজারী কাগজে ছাপা হল এনাদের দুর্দশার কথা। যেখানে শিল্প বন্ধের জন্যে দীর্ঘ দিন অবস্থান বিক্ষোভ হয়, সেখানে জলজ্যান্ত একটা কারখানা এভাবে কেন বন্ধ হয়ে গেলো? আরো তেজদ্বীপ্ত হওয়া যেত না কি?
জানি প্রশ্ন গুলো সহজ।
কিন্তু আমার কাছে উত্তর জানা নেই। কারোকাছে থাকলে জানাবেন।
যারা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তাদের কাছে আমার বিনম্র অনুরোধ, একটু মানবিকতা দেখান। কারখানার গেটে নরনারায়ন সেবার মতন খাবার ব্যবস্থা না করে, সম্মানের সাথে মাথা তুলে বাঁচতে সাহায্য করুন কর্মচারীদের। ভবিষ্যতে কারখানা খোলার সম্ভবনা যদি একান্ত নাও থাকে, এনাদের প্রাপ্য বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাটা অন্তত করুন।
সব্বাই ভাল থাকলে, তবেই আমরা সকলে ভাল থাকব।
পুজো আসছে, রাস্তায় রাস্তায় আলো লাগছে। কিন্তু এত আলোতেও, এলাকার কর্মহীন মানুষের মনের অন্ধকার দূর হবে কি?
পরিশেষে বলি ইন্ডিয়া ফয়েলস ছাড়াও অন্যান্য অনেক কারখানা আজ এই এলাকায় বন্ধ হয়ে আছে। আর্থ সামাজিক অবস্থা ভয়াবহ। অনুরোধ কোন রাজনীতি খুঁজবেন না এই লেখায়। যদি কিছু মাত্র ভুল বলে থাকি, তবে ভুল টা শুধরে দেবেন এই আশা রাখি।
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮।