একমাত্র পুত্র অনিকের কাণ্ডকারখানা দেখে কল্যাণী ফিক করে হেসে ফেলল।
ভাল মুখোরচক চানাচুর, ডালমুট, এক প্যাকেট পপিন্স, দামি শাড়ি, সুন্দর থ্রিফোল্ড ছাতা, শৌখিন চটি আরও কত কিছু সব কল্যাণীর জন্য থরে থরে সাজিয়ে রাখছে অনিক। ওর স্ত্রী রিতাও খুব মনোযোগ সহকারে অনিক কে সাহায্য করছে। খুব মজা লাগছিল। ছোট্ট রিক দূরে মহানির্বাণ মঠের মাঠে খেলা করছে। আত্মীয়স্বজনরাও ইতিমধ্যে আসতে শুরু করেছে।
কিন্তু একি ! অনিক কি কাচা কলা সেদ্ধ খাওয়াবে না কি সিদ্ধ আতপ চালের সাথে আমাকে? সাথে আবার সিদ্ধ মাছ? ছ্যাঃ, এসব তো কল্যানী খেতে পছন্দ করে না। কস্ট পেল খুব।
আয়োজন ভালই করেছে অনিক। রান্নার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। মায়ের পছন্দ অনুযায়ী। এচোড়ের গুলি কাবাব, ছানার ডালনা, সাথে আনারসের চাটনি আর শেষ পাতে বাটারস্কচ আইসক্রিম। কিছুই এখন আর খাওয়া হবে না কল্যানীর।
আসলে শেষ দিকটায়য় শরীর ভাঙতে শুরু করেছিল কল্যাণীর। খাওয়াদাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এল। খেতে খুবই ভাল বাসতো আগে। এখন নিত্যদিন নিত্যনতুন সমস্যা। ডাক্তার ভাজাভুজি, মিস্টি সব খাওয়া নিষেধ করে দিয়েছিল। তাই জীবনের প্রতি টান ক্রমশ চলে যাচ্ছিল। অথচ, অনিক ও রিতা যত্নেই রেখেছিল কল্যানীকে। উপরি পাওনা রিক সোনা।
দশদিন আগে ভোর রাতে কল্যাণী বুকে অসহ্য ব্যাথা অনুভব করতে লাগলো। সাথে নিশ্বাস নিতে কস্ট। আধঘণ্টা খুবই কস্ট পেল। ভোর বেলা অনিক ও রিতা যখন তাকে এম্বুলেন্স এ তুলল তখন দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছে। তারপর আর কিছুই মনে নেই কল্যানীর।
কেউ একজন, রিককে দুটো ডেয়ারি মিল্ক আর দুটো আংকেল চিপ্স এর প্যাকেট দিয়েছিল। ওর গল্প বলার ও খেলার সাথীর জন্য একটা করে প্যাকেট রেখে এলো ঠাম্মির সুন্দর করে সাজানো ছবিটার সামনে। দুটোই যে কল্যাণীর খুব পছন্দের সেটা আর কেউ না জানুক রিক জানে।
বড় মায়ার এ সংসার। ছেড়ে যেতে মন চায়না একেবারেই। কিন্তু এবার যে তাকে যেতেই হবে সব বন্ধন ছিন্ন করে।
অনিক কাজে বসল। মঠে গীতা পাঠে ভেসে আসতে লাগল :
বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় নবানি গৃহ্নাতি নরোহপরাণি । তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণান্যন্যানি সংযাতি নবানি দেহী ।। "
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
ভাল মুখোরচক চানাচুর, ডালমুট, এক প্যাকেট পপিন্স, দামি শাড়ি, সুন্দর থ্রিফোল্ড ছাতা, শৌখিন চটি আরও কত কিছু সব কল্যাণীর জন্য থরে থরে সাজিয়ে রাখছে অনিক। ওর স্ত্রী রিতাও খুব মনোযোগ সহকারে অনিক কে সাহায্য করছে। খুব মজা লাগছিল। ছোট্ট রিক দূরে মহানির্বাণ মঠের মাঠে খেলা করছে। আত্মীয়স্বজনরাও ইতিমধ্যে আসতে শুরু করেছে।
কিন্তু একি ! অনিক কি কাচা কলা সেদ্ধ খাওয়াবে না কি সিদ্ধ আতপ চালের সাথে আমাকে? সাথে আবার সিদ্ধ মাছ? ছ্যাঃ, এসব তো কল্যানী খেতে পছন্দ করে না। কস্ট পেল খুব।
আয়োজন ভালই করেছে অনিক। রান্নার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। মায়ের পছন্দ অনুযায়ী। এচোড়ের গুলি কাবাব, ছানার ডালনা, সাথে আনারসের চাটনি আর শেষ পাতে বাটারস্কচ আইসক্রিম। কিছুই এখন আর খাওয়া হবে না কল্যানীর।
আসলে শেষ দিকটায়য় শরীর ভাঙতে শুরু করেছিল কল্যাণীর। খাওয়াদাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এল। খেতে খুবই ভাল বাসতো আগে। এখন নিত্যদিন নিত্যনতুন সমস্যা। ডাক্তার ভাজাভুজি, মিস্টি সব খাওয়া নিষেধ করে দিয়েছিল। তাই জীবনের প্রতি টান ক্রমশ চলে যাচ্ছিল। অথচ, অনিক ও রিতা যত্নেই রেখেছিল কল্যানীকে। উপরি পাওনা রিক সোনা।
দশদিন আগে ভোর রাতে কল্যাণী বুকে অসহ্য ব্যাথা অনুভব করতে লাগলো। সাথে নিশ্বাস নিতে কস্ট। আধঘণ্টা খুবই কস্ট পেল। ভোর বেলা অনিক ও রিতা যখন তাকে এম্বুলেন্স এ তুলল তখন দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছে। তারপর আর কিছুই মনে নেই কল্যানীর।
কেউ একজন, রিককে দুটো ডেয়ারি মিল্ক আর দুটো আংকেল চিপ্স এর প্যাকেট দিয়েছিল। ওর গল্প বলার ও খেলার সাথীর জন্য একটা করে প্যাকেট রেখে এলো ঠাম্মির সুন্দর করে সাজানো ছবিটার সামনে। দুটোই যে কল্যাণীর খুব পছন্দের সেটা আর কেউ না জানুক রিক জানে।
বড় মায়ার এ সংসার। ছেড়ে যেতে মন চায়না একেবারেই। কিন্তু এবার যে তাকে যেতেই হবে সব বন্ধন ছিন্ন করে।
অনিক কাজে বসল। মঠে গীতা পাঠে ভেসে আসতে লাগল :
বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় নবানি গৃহ্নাতি নরোহপরাণি । তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণান্যন্যানি সংযাতি নবানি দেহী ।। "
সৌমিক মুখোপাধ্যায়
২৯ এপ্রিল ২০১৮, রোববার।